পিসি নিউজ বাংলা : মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স। কোন উপায় না পেয়ে অসুস্থ স্ত্রীকে ঠেলা গাড়িতে বসিয়ে কয়েকটি মি কিমি দূরে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ স্বামী। কিন্তু এত চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। ঠেলাগাড়িতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন স্ত্রী। মর্মান্তিক এই ঘটনার সাক্ষী যোগীরাজ্য।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে এক অসুস্থ বৃদ্ধাকে ঠেলাগাড়িতে চাপিয়ে কোনওক্রমে গাড়িটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন বছর সত্তরের এক বৃদ্ধ। ঘটনাটি ২৮ মার্চের। জানা গিয়েছে, বৃদ্ধের নাম শকুল প্রজাপতি। উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। অত্যন্ত গরীব ওই বৃদ্ধের স্ত্রী হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন গত সপ্তাহে। কিন্তু প্রয়োজনীয় টাকা না থাকায় হাতে টানা ঠেলাগাড়িতে স্ত্রীকে চাপিয়েই এক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়ান তিনি। যদিও একটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক তাঁর স্ত্রীকে দেখতে রাজি হন। তবে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু সেখান থেকে জেলা হাসপাতাল বহুদূরে তাই ওই বৃদ্ধ অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার কথা ভাবেন। কিন্তু এখানেই নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। হাজার অনুরোধের পরেও কোনও অ্যাম্বুলেন্স চালকই বিনা পয়সায় তাঁদের জেলা হাসপাতালে পৌঁছে দিতে রাজি হয়নি। শেষে কোনও উপায় না পেয়ে ওই ঠেলাগাড়িতে চাপিয়েই পাঁচ ঘটনার চেষ্টায় অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জেলা হাসপাতালে পৌঁছোন শকুল। কিন্তু এমনই দুর্ভাগ্য যে, জেলা হাসপাতালও ওই বৃদ্ধার চিকিৎসা করতে রাজি হয়নি। উল্টে হাসপাতালের চিকিৎসক অন্য একটি হাসপাতালে রেফার করে বলে অভিযোগ। সারাদিন গরমের মধ্যে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে শেষে জীবন যুদ্ধে হার মানেন ওই বৃদ্ধা।
এদিকে, এই ঘটনা সামনে আসার পরেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। নড়েচড়ে বসেছে যোগী প্রশাসনও। কেন ওই বৃদ্ধার চিকিৎসা না করে এমন অমানবিক ব্যবহার করা হয়েছে, তা জানতে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক এবং উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রীও।