Monday, May 13, 2024
spot_img
spot_img
Homeজেলামিলনস্থল এক হলেও গঙ্গা ও জলঙ্গীর জলের রং আলাদা? জেনে নিন কারণ

মিলনস্থল এক হলেও গঙ্গা ও জলঙ্গীর জলের রং আলাদা? জেনে নিন কারণ

পিসি নিউজ বাংলা : নদিয়ার জেলার নবদ্বীপের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে গঙ্গা নদী। গঙ্গার ওপারেই মিঞাপুর। অর্থাৎ  আজকের দিনে যে জায়গা মায়াপুর নামে প্রসিদ্ধ। মায়াপুরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে জলঙ্গী নদী। দর্শনার্থীরা যখন নবদ্বীপ ধাম ভ্রমণ সেরে ফেরি পথে ট্রলারে মায়াপুর “ইসকন মন্দির” উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন, তখন দেখা যায় গঙ্গা তথা হুগলি ও জলঙ্গী নদীর মিলনস্থল। দর্শনার্থীরা এই দুই নদীর মিলন স্থল নিয়ে বরাবরই ভীষণ কৌতূহলী থাকেন।গঙ্গার জল মূলত ঘোলাটে বর্ণের হয় তবে জলঙ্গী নদীর জল হয় স্বচ্ছ প্রকৃতির। দুই নদীর মিলনস্থলেও জলের রং আলাদা! এর কারণ হিসাবে অনেকেই অনেক ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

ভূগোলবিদ জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী জানান, “সবার আগে জানতে হবে গঙ্গা এবং জলঙ্গী নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়। গঙ্গার উৎপত্তিস্থল হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা থেকে। সেখান থেকে পার্বত্য উচ্চ ঢাল বরাবর বই আসে গঙ্গা নদী। সেই সময় তার চলার পথে বয়ে নিয়ে আসে ক্ষয়প্রাপ্ত পলিরাশি। যা মূলত হিমালয় পর্বতমালার মুখ্য শিলা ‘রূপান্তরিত শিলা’। ইংরেজি নাম ‘মেটামরফিক রকস’ থেকেই সৃষ্ট। অর্থাৎ গঙ্গা তার প্রবাহ পথের ঢাল বরাবর ক্ষয় প্রক্রিয়ার জন্য সৃষ্ট ‘বালি-পলি-কাদা’ ইত্যাদি জলরাশির সঙ্গে বয়ে নিয়ে চলেছে। ফলে গঙ্গা নদীর জল হয় ঘোলাটে বর্ণের। এমনকি এই জলের ঘনত্ব স্বাভাবিকভাবেই বেশি হয়। তাছাড়া সমুদ্রের জোয়ারের জল নবদ্বীপ পর্যন্ত আসে। যা নদীর জলের ঘনত্ব আরও বাড়ায়।

অন্যদিকে, জলঙ্গী নদীর উত্‍পত্তিস্থল হল বাংলাদেশের প্রবাহিত পদ্মা নদী থেকে। পদ্মা নদীর একটি শাখাই এই নদীর উৎপত্তিস্থল। মুর্শিদাবাদ জেলার কাছে ভগবানগোলা থেকে আনুমানিক ২৪০ কিলোমিটার সমতল ভূমিরূপের মধ্যে দিয়ে আঁকা বাঁকা পথ দিয়ে এসে নদিয়ার নবদ্বীপের গঙ্গা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। জলঙ্গী নদীর জল সারাবছরই স্থিতিশীল। ফলে তা স্বচ্ছ প্রকৃতির। তবে জলঙ্গী নদীর জল কিছু জায়গায় সবুজ বর্ণের। এর মূল কারণ ‘ইউট্রোফিকেশন’। অর্থাৎ যাকে বাংলায় বলা হয় ‘শৈবালীকরন’।”

অতএব একটি সম্পূর্ণ ঘোলাটে রঙের নদী এবং একটি স্বচ্ছ পরিষ্কার জলের নদী যখন এক জায়গায় এসে মিলিত হয়, তখন তার রং এর তফাৎ যথেষ্টই বোঝা যাচ্ছে। ঘনত্বের হেরফেরের জন্যই দুটি নদীর জলের রং মিশতে পারে না। যার ফলে খুব সহজেই এই দুই নদীর ওপর দিয়ে নৌকা করে যাওয়ার সময় যেকোনো লোকই দুটি নদীর মিলনস্থল বুঝতে পারবেন। অর্থাৎ এই দুই নদীর উৎপত্তি ও গতিপথ বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় এদের মিলনস্থলের রহস্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments