পিসি নিউজ বাংলা : সার্ভাইকাল বা জরায়ুর ক্যান্সার মোকাবিলায় ভারতে তৈরি হল প্রথম ভ্যাকসিন। এটি তৈরি করেছে পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। ভারতীয় টিকাকে অনুমোদন দিয়েছে ‘ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ বা ‘ডিসিজিআই’-এর ‘সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটি’। টিকার নাম ‘কোয়াড্রিভালেন্ট হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস ভ্যাকসিন’ বা সংক্ষেপে ‘কিউএইচপিভি’। জরায়ুর ক্যান্সারের রোগীদের জন্য সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ভারতে তৈরি এই টিকা গ্রহণ করতে পারবেন ৯-২৬ বছর বয়সী নারী-পুরুষ উভয়ই।
এতদিন জরায়ুর ক্যানসারে ভ্যাকসিনের জন্য ভারতকে অন্য দেশ থেকে ওষুধ আমদানি করতে হত। এবার সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি এই ভ্যাকসিন চিকিৎসা ক্ষেত্রে তো বটেই, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশা। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে সরকার এই টিকাটি টিকাদান কর্মসূচির অন্তর্ভূক্ত করার কথাও ভাবছে।
সূত্রের খবর, বছর শেষের আগেই বাজারে মিলবে কিউএইচপিভি ভ্যাকসিন। এতে মহিলাদের সার্ভাইকাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি এইচপিভি-র সংক্রমণ রুখতে পারে। এছাড়া পেঞ্চিল ক্যানসার, অ্যানাল ক্যানসারকেও প্রতিরোধ করবে।
উল্লেখ্য, জরায়ুর সবচেয়ে নিচের অংশকে বলা হয় ‘সের্ভিক্স’। সেখানে কোনও ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হলে তাকে বলা হয় সার্ভিকাল ক্যান্সার। তবে এইচপিভি শুধুমাত্র জরায়ুর ক্যান্সারের কারণ নয়। এই ভাইরাসের সংক্রমণে ভালভা, যোনি, লিঙ্গ, মলদ্বার, মুখের পিছনের অংশ এবং গলার উপরের অংশেও ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এইচপিভি ভ্যাকসিন ‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস’ থেকে সৃষ্ট সমস্ত রকম ক্যান্সারের প্রভাব কমাতে পারে। ৯৫ শতাংশের বেশি সের্ভিকাল ক্যান্সারের রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, এর কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর দেশে প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার ৮৪৪ জন মহিলা এই রোগে আক্রান্ত হন। ভারতে ১৫-৪৪ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের পরে এই ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বাধিক।