পিসি নিউজ বাংলা:- গ্রেফতারির পর শুক্রবার বিকেলে কম্যান্ড হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয় গরু পাচার মামলায় ধৃত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal)। সিবিআই সূত্রে খবর, হাসপাতাল থেকে ফেরার পর থেকে নিজাম প্যালেসে ১৪ তলার গেস্ট হাউসে রয়েছেন তিনি। সন্ধেয় অনুব্রতকে জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্ত জেরায় প্রায় ‘নীরব’ অনুব্রত। সূত্রের খবর, কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিচ্ছেন না তিনি। তারা মায়ের আশীর্বাদী ফুলই ভরসা তাঁর। কাগজে মোড়া আশীর্বাদী ফুল মাঝে মধ্যেই কপালে ঠেকাচ্ছেন অনুব্রত। অবশ্য অনুব্রতর ঈশ্বর ভক্তি, বিশেষত কালী ভক্তি কথা অনেকেরই জানা। বোলপুরের বাড়ির অফিসে ধুমধাম করে কালী পুজো করেন তিনি৷ নিয়মিত তারাপীঠের মন্দিরে গিয়েও পুজো দিতে দেখা যায় তাঁকে। সিবিআই সূত্রের দাবি, অনুব্রতকে দেখভালের জন্য সর্বক্ষণ তাঁর সঙ্গে রয়েছেন একজন পরিচিত ব্যক্তি।
অনুব্রত তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে ওই ব্যক্তির কাছে দলের মনোভাবের কথা জানতে চান। এদিকে, প্রথম দিন অনুব্রতকে জেরা করে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় সিবিআই। বোলপুরে তাঁর কত পরিমাণ সম্পত্তি ? কার নামে কটি বাড়ি আছে? সায়গেলের কাছে গরু পাচারের যে টাকা আসত, তার ভাগ অনুব্রত পেতেন কিনা? পেলেই বা সেই টাকার পরিমাণ কত? গরু পাচারে মূল অভিযুক্ত এনামুল হক বীরভূম দিয়ে গরু পাচার করত সীমান্ত পেরিয়ে। কত দিন ধরে এনামুলকে চেনেন তাও জানতে চান সিবিআই কর্তারা৷ বেআইনি আর্থিক লেনদেনের এই টাকা কীভাবে অনুব্রতর কাছে আসত, তাও জানতে চান সিবিআই কর্তারা৷ সিবিআই সূত্রে খবর,অনুব্রতর আত্মীয়দের নামেই ৪৯টি দলিল মিলেছে। অনুব্রত মণ্ডলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি হাতে রয়েছে তদন্তকারীদের। ওই নথি দেখিয়ে আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে চান আধিকারিকরা। অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রীর ক্যানসারে মৃত্যু হয়।
Anubrata Mandal পকেটে মা তারার আশীর্বাদী ফুল, জেরার ফাঁকে কপালে ঠেকাচ্ছেন অনুব্রত।
CBI সিবিআইয়ের কাছে চাইলেন মুড়ি, মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনে কান্নায় ভেঙে পড়েন দু’জনেই।
বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন স্ত্রীর চিকিৎসা চলেছিল। কীভাবে স্ত্রীর চিকিৎসার বিপুল খরচ সামাল দিলেন, সে প্রশ্নও করা হয় অনুব্রতকে। কিন্ত অনুব্রতকে জেরার সময় মুখ খুলছেন না তিনি। শুক্রবার মেয়ের সঙ্গে দু’ বার কথা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। লাউড স্পিকারে ফোন করে কথা বলেন। সেই সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাইরের খাবার খাননি তিনি। খেয়েছেন সঙ্গে আনা মুড়ি। নিজামের ক্যান্টিন থেকে আনা লাঞ্চ খান। সিবিআই দফতরে একটি গেস্ট রুমে রাখা হয়েছে। সেখানে তক্তাপোসের ওপরে কম্বল পেতে ঘুমোন।