রঙ বাহারী : এন.কে. মণ্ডল, হরিহরপড়া, মুর্শিদাবাদ।
কিশোর সাহিত্য
ফটিক বাবু নিত্যান্ত ভালো মানুষ শিক্ষিত হলেও বোকা আছেন তিনি। ভোলাভালা সাদাসিধে ব্যাক্তি। গরীব হলেও প্রাণে কিন্তু কোনো সাহস নেই। একবার শহরের বড় পোশাকের দোকানে গিয়েছিল, পুজোর বাজার বলে কথা। তাতে আবার গিন্নির রাগ বড্ড চন্ডাল। তিনি গিন্নিকে খুব সমঝে চলেন। ছেলেমেয়ে গুলোও হয়েছে কেমন একটা বেয়ারা প্রকৃতির। বড় দোকানে গিয়ে পড়লেন মহাবিপদে। কতশত পোশাকের গাদা সাঁজানো হয়েছে স্তরে স্তরে। কতশত রং বাহারে নানান কাপড়। ফটিক বাবু দোকানে প্রবেশ করতেই দোকানের একজন পাহারাদার হাঁটুতেও কপালে সেলাম ঠুকে ভিতরে যেতে বললেন। ফটিকবাবু মহা আনন্দে গদগদ হয়ে উঠলো। তাকে গাঁয়ের লোকেরা একসঙ্গে বসবাস করলেও সম্মান করে না অথচ শহরের তাঁর কত কদর। সেলাম পর্যন্ত দিচ্ছে তাঁকে। ফটিকবাবু শাহি কায়দায় বসে বিভিন্ন কাপড় দেখছেন সঙ্গে ছেলে নগেন চাঁদ আছে হাতে তার চিপসের প্যাকেট। খাচ্ছে আর এদিক ওদিক তাঁকাচ্ছে। ফটিক বাবু দোকানি কে বললেন তাকে যেন সব থেকে ভালো জামদানি শাড়ি দেখায়। দোকানি তাঁকে শাড়ি দেখাচ্ছে এক এক করে ভিন্ন ভিন্ন রঙের। দোকানিও ভাবছেন এবার বড্ড বড় খদ্দের পেয়েছি। অবশেষে বেছে বেছে ভালো ভালো চকচকে কাপড় কিনে আনলেন সবার জন্য। ফটিক বাবু বাজার নিতে নিতে পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে সে যাক সবচেয়ে ভাল ভাল কাপড় তো পাওয়া গেল। এসব কাপড় গ্রামের লোকেরা চোখে দেখেনি। ফটিক বাবু নাচতে নাচতে আনন্দে বাড়ি চলে আসলেন কিন্তু বাড়ি এসে সব যত ঝামেলা। স্ত্রীর সঙ্গে তুই তোকারি গালমন্দ চলছে বৃষ্টির মত। কেননা ফটিক বাবু সুন্দর সুন্দর কাপড় কিনেছেন বটে, তবে ভয়েল কাপড়। হাতের কিছু কাজ আছে যা বাজারে পঞ্চাশ ষাট টাকায় পাওয়া যায়। আসলে ফটিক বাবু কাপড় চেনেন না রং চেনেন। বাহারী রং। সে কাপড় নিয়ে গিন্নীর সঙ্গে ঝামেলা চলতে লাগল। আর নগেন ললিপপ খেতে খেতে পাড়ায় খেলতে চলে গেল।