অপর্ণা দাস, পিসি নিউজ বাংলা : লকডাউন, করোনা- গত দু’বছরে এই শব্দগুলো পাল্টে দিয়েছে অসংখ্য মানুষের জীবনযাত্রা। বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বহু পড়ুয়ার। যদিও করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসতেই দীর্ঘদিন পর খুলেছে স্কুল। পড়ুয়াদের মধ্যে ফিরেছে একসঙ্গে ক্লাস করার আনন্দ। দীর্ঘ দুই বছর গৃহবন্দি জীবন কাটাতে হয়েছে পড়ুয়াদের। অবশেষে হাপ ছেড়ে বাঁচল তারা। দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেড়েছে স্কুল ছুটের সংখ্যা। পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে মোবাইল হাতে গেম খেলতে ঘন্টার পর ঘন্টা বুঁদ হয়ে থেকেছে অধিকাংশ পড়ুয়া। তবে তার মধ্যেও ব্যতিক্রম আছে। অনেকে আবার এই সময় সুনিপুন হাতের কাজ করে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ঠিক যেমন কাগজ দিয়ে নানান জিনিস গড়ে সকলের নজর কেড়েছে চতুর্থ শ্রেণির এক পড়ুয়া। যা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আগরপাড়া শিমুলতলার বাসিন্দা ওই পড়ুয়ার নাম কৃষ্ণ দেবনাথ। মাত্র ১০ বয়সে কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস যেমন বন্দুক মেশিনগান, রাইফেল, রোবট-সহ নানা পশুপাখির মডেল তৈরি করে। খেলনাগুলি দেখে রীতিমত অবাক হতে হয়। কারণ কৃষ্ণর বানানো এইসব জিনিস বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের বন্দুক হুবহু আসলের মতো দেখতে। তার সুদক্ষ হাতে প্রায় এক থেকে দেড় ইঞ্চির মধ্যে নিখুঁতভাবে ফুটে ওঠে কারুকার্য।
এ বিষয়ে কৃষ্ণ দেবনাথের মা জানান, ছোট বয়স থেকেই নানান ধরনের হাতের কাজ করতে পটু সে। কাগজ, ধূপের কাঠি ও ফেলে দেওয়ার মতো বিভিন্ন জিনিস দিয়ে আপন মনে নানা মডেল তৈরি করে। এর উপর রং করে জিনিসটিকে আসলের মতো রূপ দেয়। লকডাউনে তার এই কাজ যেন নেশায় পরিণত হয়েছে। অবশ্য কৃষ্ণের এই কাজে তার দাদা, বাবা এমনকী ঠাকুরমাও তাকে যথেষ্ট উৎসাহ দেন বলে জানা গিয়েছে। পেশায় একজন ব্যবসাদার বাবা নিখিল দেবনাথও ছেলেকে এই কাজে সাহায্য করতে কিনে দেন প্রয়োজনীয় সামগ্রী। কৃষ্ণের হাতের ছোঁয়া আর পরিবারের সদস্যদের উৎসাহে কাগজের তৈরি জিনিস গুলো যেন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তার হাতের কাজ দেখে বাহবা জানিয়েছেন পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে অসংখ্য মানুষ। ফলে ক্ষুদের কর্মকাণ্ডের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। তবে গিনেস বুকে নাম তোলার জন্য নয়, নেহাতই আপন-মনে খেলার ছলে এসব জিনিস তৈরি করে কৃষ্ণ। এমনটাই জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। অবশ্য কে বলতে পারে আগামী দিনে কৃষ্ণের এই দক্ষতাই হয়তো তাকে গিনেস বুক অব রেকর্ডসে নাম তুলতে সাহায্য করবে কিনা!