পিসি নিউজ বাংলা : রামায়ণের কুম্ভকর্ণের ঘুম নিয়ে আমরা প্রায়ই হাসি-ঠাট্টা করে থাকি। তিনি বছরের ৬ মাস ঘুমিয়েই কাটাতেন। আমাদের চেনা-পরিচিতর মধ্যে যদি কেউ একটু বেশি ঘুমাতে ভালবাসেন, তাহলে তাঁকে আমরা ব্যঙ্গ করে ‘কুম্ভকর্ণ’ বলে থাকি। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বাস্তবে আজও এমন মানুষ রয়েছেন। এবার কলির কুম্ভকর্ণের সন্ধান পাওয়া গেল।
জানা গিয়েছে, রাজস্থানের ভাড়ওয়া গ্রামের বাসিন্দা, ৪২ বছর বয়সী পুরখারাম বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০দিনই ঘুমান! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। অতি কষ্টে বছরের মাত্র ৬৫দিন জেগে থাকেন। রামায়ণের কুম্ভকর্ণ বছরের ৬ মাস ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতেন। কিন্তু পুরখারাম তার থেকেও বেশি ঘুমোতে পারেন!
আসলে পুরখরাম এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তাঁর এই রোগ ধরা পড়ে। প্রথমে তিনি দিনে ১৫ ঘণ্টা ঘুমোতেন। ক্রমশ তা বাড়তে শুরু করে। এখন টানা ২০ থেকে ২৫ দিন ঘুমিয়ে থাকেন পুরখরাম। তাঁর নিজের একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। কিন্তু তার ঘুমের কারণে বছরে ৫ থেকে ৬ দিনের বেশি তিনি দোকান চালাতে পারেন না।
ঘুমের তোর এতোটাই যে অনেক সময় কাজ করতে করতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। শুনলে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন যে, ঘুমিয়ে থাকাকালীন তাঁর পরিবারের লোকরা তাঁকে স্নান করিয়ে দেন, খাবার খাইয়ে দেন। অতিরিক্ত ঘুমের কারণে তাঁর শরীর সব সময় অবসন্ন হয়ে থাকে।
এই ঘুমের ব্যাধিকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া। এই বিরল রোগ আদতে একপ্রকার মানসিক অসুস্থতা। যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি দীর্ঘক্ষণ ঘুমিয়ে থাকতে পারে। ফলে তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রায় নেতিবাচকভাবে প্রভাব পড়ে। অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া হল এক ধরণের হাইপারসোমনিয়া, যা টিএনএফ-আলফা নামে পরিচিত ব্রেন প্রোটিনের ওঠা-নামার কারণে ঘটে থাকে।
পুরখরামও সেই রোগে আক্রান্ত। তবে এই রোগের ঠিক কি চিকিৎসা, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি।