পিসি নিউজ বাংলা : অবশেষে শিক্ষকতার চাকরি থেকে অঙ্কিতা অধিকারীকে বরখাস্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, বেতন বাবদ পাওয়া সমস্ত টাকাও ফেরত দিতে হবে। দু’দফায় সেই অর্থ হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিতে হবে।
শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শিক্ষক হিসাবে আর পরিচয় দিতে পারবেন না রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। কোচবিহারের যে ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘শিক্ষকতা’ করতেন, সেই স্কুলে ঢুকতে না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর স্কুল শিক্ষিকার চাকরিতে যোগ দেন অঙ্কিতা। এর জন্য ৪১ মাস তিনি যে বেতন পেয়েছেন, তার পুরোটা দুটি কিস্তিতে ফেরত দিতে হবে। প্রথম কিস্তির অর্থ জমা দিতে হবে আগামী ৭ জুনের মধ্যে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) মাধ্যমে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পরেশের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে। অঙ্কিতার বিরুদ্ধে বাবার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ ভাবে শিক্ষকতার চাকরি নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন ববিতা সরকার নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। কম নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়ে যান অঙ্কিতা। অন্য দিকে, তালিকার ওপরে থাকা ববিতা এখনও বেকার।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, তফসিলি প্রার্থীদের প্রথম মেধাতালিকায় প্রথম ২০-তে ছিলেন না অঙ্কিতা। কিন্তু ২০১৭ সালের নভেম্বর দ্বিতীয় তালিকায় একেবারে ‘টপার’ হয়ে যান মন্ত্রীর মেয়ে। প্রথম তালিকায় ২০ নম্বর স্থানে থাকা ববিতা সরকার মামলা করেন। সেই মামলায় চলতি সপ্তাহে হাই কোর্টে কমিশনের তরফে জানানো হয়, ৬১ নম্বর পেয়েছিলেন ‘টপার’ অঙ্কিতা। কিন্ত দ্বিতীয় মেধাতালিকায় ২১ নম্বরে থাকা ববিতা পেয়েছিলেন ৭৭। কমিশন জানায় যে, অঙ্কিতা পার্সোনালিটি টেস্টেও বসেননি।
শুক্রবার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্টের প্রশ্ন, “আদালতের নির্দেশের পরেও মন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতার বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ নেয়নি এসএসসি ? অঙ্কিতা অধিকারী কি এখনও চাকরিতে আছেন ? তিনি কি স্কুলে কাজ করছেন”?
পরেশকে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের কাছে যান পরেশ। শুক্রবার সকালেও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ মুখে পড়েন মন্ত্রী। সেই সময় তাঁর মেয়েকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।