পিসি নিউজ বাংলা : শনিবার কালবৈশাখী ঝড়ের সময় কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঝড়ের সময় রোয়িং করতে গিয়ে সরোবরে তলিয়ে যায় ২ কিশোর। ঘটনার পর প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে ওই দুই কিশোরের খোঁজে তল্লাশি চালায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। অবশেষে উদ্ধার হয় তাদের নিথর দেহ। এদের মধ্যে পুষণ সাধুখাঁকে(১৪) নিয়ে যাওয়া হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক তাকে দেখার পর মৃত ঘোষণা করেন। মৃত অন্য কিশোরের নাম সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়।
জানা যায়, ইন্টার স্কুল রোয়িং প্রতিযোগিতার জন্য প্রাকটিস করছিল ৪ জন। প্রাকটিসের সময়েই আচমকা ঝড় ওঠে। আর সেই সময় নৌকা উল্টে ঘটে দুর্ঘটনা। মৃতদের মধ্যে একজন সাউথ পয়েন্টের পড়ুয়া। অপরজন মৃত পড়ুয়া এক পুলিসকর্তার ছেলে। ঘটনার পর দুদিন লেক ক্লাব বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে নোটিশ দিয়ে জানিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বন্ধ ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবও। ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে রবীন্দ্র সরোবর থানা। ঘটনার পর থেকেই মৃতদের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তবে মৃত দুই পড়ুয়া ও স্থানীয়দের অভিযোগের তির ক্লাব কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই। কেন সতর্কতা মানা হল না? কেনই বা কালবৈশাখীর মধ্যে বোট নামানো হল? ঝড়ের পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও কেন রোয়িংয়ের অনুমতি দিল স্কুল কর্তৃপক্ষ? মৃত এক কিশোরের বাবার বক্তব্য, ”কেন আপনারা আমাকে ২ ঘণ্টা পরে জানালেন? কেন আধ ঘন্টার মধ্যে জানান হল না? আমাদের অনেক লোক চেষ্টা করতে পারত। আর একজন যে ছেলেটি মারা গিয়েছে তার বাবা পুলিস অফিসার। তাঁরা জানতে পারলে তখন আমরা যে অ্যাকশন নিতাম, সেটা ৬টার পরে নিতে হয়েছে! দু’চোখ ভরা জল নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সরাসরি কাঠ গড়ায় দাঁড় করিয়ে এমনই অভিযোগ করেছেন তিনি।
পুলিস ঢোকানো, পুলিসের স্পিড বোট দেওয়ার, ডুবুরি দেওয়া। সেগুলো ঝড়ের সময় বাচ্চাগুলোকে নামিয়ে দিয়েছেন, কোন সার্পোট ইনফ্রাস্ট্রাকচার নেই ম্যাডাম…আমার ছেলে রাস্তায় অ্যাক্সিডেন্ট করত, অন্য কিছু করত, অন্য ব্যাপার। স্কুলকে ফাইনালে তুলে, স্কুলের হয়ে প্র্যাকটিস করতে গিয়েছে ঝড়ের সময়। আপনারা তাকে তোলেননি, তখন যেতে দিয়েছেন স্কুল ইন্সট্রাকটরের নির্দেশে। ওই ২ ঘন্টায় কেন অ্যাকশন নেননি, হাসপাতালে এসেছি ২ ঘন্টা পেরিয়ে গিয়েছে, এখন সাউথ পয়েন্টের কেউ আসেনি, কেন ম্যাডাম, কেন আপনারা নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন?”
প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কালবৈশাখী শুরু হয় দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলা সহ কলকাতায়। ঘন্টায় ৯০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায় শহরে এবং তারপরে বৃষ্টি হয়।