পিসি নিউজ বাংলা : মাঝ রাতে শুধু যে মামলার শুনানিই হল তাই নয়, একই সঙ্গে রীতিমত নির্দেশও বার হয়ে গেল। এসএসসি’র কার্যালয় আচার্য সদন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে। কলকাতা হাই কোর্টের কড়া নির্দেশ, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকবে সেই ঘেরাটোপ। তার মধ্যেই এসএসসি’র নথি পৌঁছে দিতে হবে কলকাতা হাই কোর্টে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এমনই নজিরবিহীন পদক্ষেপ করল কলকাতা হাই কোর্ট।
জানা যায়, চাকরিপ্রার্থীদের আর্জি মেনে মাঝরাতেই শুনানি করলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবারই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে জেরা করেছে সিবিআই। অন্যদিকে, আচমকাই একই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করেন এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। তাঁর জায়গায় আসেন আইএএস অফিসার শুভ্র চক্রবর্তী।
চাকরিপ্রার্থীরা আশঙ্কার সঙ্গে অভিযোগ করেছেন, ডিজিটাল নথি নষ্ট করা হতে পারে রাতেই। তাই তাঁদের আর্জি মেনেই রাত সাড়ে ১২ টার মধ্যে সিআরপিএফকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) অফিস ঘিরে ফেলার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কড়া নির্দেশ দিয়ে জানিয়ে দেন, হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না আচার্য সদনে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টা পর্যন্ত এসএসসি অফিসে সকলের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
হাই কোর্টের সেই নির্দেশের পরপরই রাত ২.৫০ মিনিট নাগাদ আচার্য সদনে পৌঁছোয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, CRPF মোতায়েন করা হয় আচার্য সদনে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার পর অবশ্য এসএসসি অফিসের ভেতরে ঢোকা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। গেট টপকে ভেতরে ঢোকে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্য পুলিশের পাঁচ নিরাপত্তারক্ষী সেই সময় ভিতরে ছিলেন। অবশেষে গেট খোলা হয়। শুধু তাই নয় জানা যায়, সিজ করে দেওয়া হয়েছে অফিস। তখন থেকেই অফিসের বাইরে কাউকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। এর পাশাপাশি বাইরে থেকে কাউকে ভিতরেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের এক এএসআই বলেন, ”আমাদের বাইরে বেরোতে দিচ্ছে না। খাবার নেই। থানাকে ফোন করেছি। দেখি কী হয়।”
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে নিজের চেম্বার থেকেই মামলা শোনেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে মামলাকারীদের আইনজীবী দাবি করেন, সুরক্ষার কথা ভেবে কমিশনের হাতে থাকা হার্ড ডিস্ক-সহ নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি সংরক্ষণ করা হোক। পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য বা তাঁদের লোকজন নথি নষ্ট করতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এরপরই একের পর এক নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
অন্যদিকে এদিনই নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের কার্যালয়ে হাজিরা দিচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার হতে পারেন!