লোকসভার আগে মহিলা ভোট টানার চেষ্টা, ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ বিলে অনুমোদন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার।
সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে সোমবার। রবিবারের সর্বদল বৈঠকে মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ এবং সহমতের মাধ্যমে পাশ করানোর দাবি উঠেছিল তীব্রভাবে। সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সোমবার সন্ধ্যায়, নয়াদিল্লিতে সংসদের অ্যানেক্স হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরুর দিনেই বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকেই সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ এই বৈঠক ডাকা হয়। যদিও ঠিক কোন ইস্যুতে এই বৈঠক তা এখনও স্পষ্ট করা হয়নি, তবে প্রধানমন্ত্রী আগেই ইঙ্গিত করেছিলেন, ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হবে পাঁচদিনের বিশেষ অধিবেশনে। প্রায় ৯০ মিনিট ধরে হয় সে বৈঠক। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে কোনও ব্রিফিং করা হয়নি।
এমনকি বৈঠক কি নিয়ে কিংবা কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা তাও সরকারের তরফে জানানো হয়নি। ফলে মোদীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক ঘিরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। তবে মহিলা সংরক্ষণ বিল এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর তা বিশেষ অধিবেশনে আগামীকাল মঙ্গলবার পেশ করা হবে। এমনটাই জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে। মহিলা সংরক্ষণ বিলে, লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভায়, মোট আসনের ৩৩ শতাংশ বা এক-তৃতীয়াংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের মধ্যে আবার তফশিলি জাতি, উপজাতি এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের জন্যও সংরক্ষণের প্রস্তাব রয়েছে। বিলে আরও বলা হয়েছে, প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনের পর সংরক্ষিত আসনগুলি পরিবর্তন করা উচিত। এর আগে, সংসদের পাঁচ দিনের বিশেষ অধিবেশনের প্রথম দিন, লোকসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদের দুই কক্ষের ইতিহাস ও বিভিন্ন তাৎপর্যের কতা তুলে ধরেন তিনি। আবেগঘন ভাষণে, প্রধানমন্ত্রী মোদী পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রীদের স্মরণ করেন। লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে, ২০১৪ সালে তাঁর প্রথমবার সংসদে প্রবেশ করার মুহূর্তের কথাও বলেন তিনি। তবে, সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ হল, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বেরও কথাও প্রধানমন্ত্রী মোদীর এদিনের বক্তৃতায় উঠে এসেছে। তবে, একই সঙ্গে তিনি ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা সরকারের জারি করা জরুরি অবস্থার কথাও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর প্রশংসাও শোনা গিয়েছে তাঁর বক্তৃতায়। নেহেরুর বিখ্যাত ‘অ্যাট দ্য স্ট্রোক অব মিডনাইট’ বক্তৃতার প্রশংসা করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।