পিসি নিউজ বাংলা : ‘ইডি, সিবিআই-কে ব্যবহার করে তৃণমূলকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেও বিজেপির কোনও লাভ হবে না।’ বুধবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই হুংকার দেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত ইডিকে প্রশ্ন করে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে সমস্যা কোথায়? কেন বারবার দিল্লিতে তলব করা হচ্ছে?
এ বিষয়ে দেশের শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে , কলকাতায় ইডি আধিকারিকদের যাতে সুরক্ষা দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, ইডির তরফে এই প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু শীর্ষ আদালতে বলেন, অতীতে কলকাতায় সিবিআই আধিকারিকদের ঘেরাও করার ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া অভিষেক একজন প্রভাবশালী রাজনীতিক। অভিষেক ও রুজিরাকে সাক্ষী হিসেবে তলব করছেন না কি অভিযুক্ত হিসেবে, এ ব্যাপারেও জানতে চায় শীর্ষ আদালত।
জানা গিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে ১৭ মে।
এই মামলায় তাঁরা তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়লা পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একাধিকবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রীকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। বেশ কয়েকবার হাজিরও দিয়েছেন অভিষেক। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে দুই সন্তানের শারীরিক সুস্থতার কথা ভেবে কলকাতা থেকে দিল্লিতে এসে হাজিরা দিতে পারেননি রুজিরা। দিল্লিতে বারবার তলব নিয়ে ইডির বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে যান সাংসদ অভিষেক। সমস্যা এতটা জোরালো হয়ে পড়ে যে, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। এদিন সুপ্রিম কোর্টে অভিষেকের হয়ে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। তিনি আদালতকে পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তার পরই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ইডির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন “কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে সমস্যা কোথায়?”
সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। এই মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। চলতি বছরের ২১ ও ২২ মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার জন্য সমন জারি করা হয়েছিল।