পিসি নিউজ বাংলা:- Health Care Age রুপোলি জগতে অনেক সময়েই সম্পর্কের সমীকরণের অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটে, তা আমরা অনেকেই জানি। তবে বাস্তবেও এমন সম্পর্কের সমীকরণের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে মানসিক সুস্বাস্থ্য। গবেষণা বলছে, ৪০ পেরোনোর পর বিবাহবিচ্ছেদ হলে আদতে তা লাভই হতে পারে। সম্পর্কের পাশাপাশি তা মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আর এই দুইয়ের প্রভাব শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে পড়া অবশ্যম্ভাবী। পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক তাঁর গবেষণায় দেখেছেন, বিবাহবিচ্ছেদের পর প্রায় ৪৩ থেকে ৪৬ শতাংশ মানুষ ভগ্ন হৃদয় নিয়ে ঘুরে বেড়ান। অথচ, জীবনের এই বিশেষ পর্বের বেশ কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে।
নিজের জন্য বাঁচা- জীবনের শুরুতে অন্যের ভালোমন্দ দেখতে গিয়ে অনেকে নিজেকেই ভুলে যেতে শুরু করে। নিজেকে কোনও সময়ই দিতে পারেন না। ফলে বিবাহ বিচ্ছেদের অব্যবহিত পরে তাঁদের মধ্যে নিজেকে দেখার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। শারীরিক, মানসিকভাবে একটা নতুন উদ্যম তৈরি হতে পারে। ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা আদতে নিজের উপকারে আসে।
অসুস্থ সম্পর্ক থেকে মুক্তি- জীবনের একটা বড় সময় যদি অসুস্থ সম্পর্কের মধ্যে কেটে যায়, তাহলে তার প্রভাব পড়তে পারে বার্ধক্যেও। এরফলে বার্ধক্যে আরও বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে। দিনের পর দিন বয়ে চলা এই অসুস্থ সম্পর্কে থেকে বেড়িয়ে আসাই শ্রেয়। তাই ৪০-এর পরে বিবাহবিচ্ছেদকে আশীর্বাদ হিসেবেই দেখা উচিত। এটা এমন একটা সময়, যখন কোনও ব্যক্তি মানসিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট সাবলম্বী এবং নিজের দায়িত্ব নিতে সক্ষম। আবার, নতুন জীবন শুরুর পক্ষেও এমন কিছু দেরি নয়। তাই নতুন জীবন সঙ্গীর হাত ধরে পথচলা শুরু করা যেতেই পারে।
Health Care Age চল্লিশ পেরিয়ে ভাল থাকার রহস্য? বিবাহবিচ্ছেদের কারণ উঠে আসার রহস্য।
Sukanya Mandal প্রভাবশালীদের ‘ঋণ’! সিবিআইয়ের নজর অনুব্রত কন্যার সংস্থার ব্যালেন্স শিটে।
সন্তানের পক্ষেও মঙ্গল- বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ সন্তানের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, তুলনামূলকভাবে অসুস্থ দাম্পত্যের সন্তান আরও বেশি নেতিবাচক পরিবেশে বড় হয়। তার প্রভাব সুদূর প্রসারী, যা সন্তানের জীবনকেও তছনছ করে দিতে পারে। এর থেকে অনেক ভাল, একলা মা বা একলা বাবা হিসেবে সন্তানকে অনেক সময় দেওয়া। তা ছাড়া, অশান্তির মধ্যে বড় হতে থাকলে, ভবিষ্যতে নিজের সম্পর্কগুলির ক্ষেত্রেও হয়তো সে একই ভুল করে বসবে। এমন সম্ভবনাই প্রবল। তাই একেবারে শুরুতেই সন্তাকে আদর্শ সম্পর্কের একটা ধারণা দিয়ে রাখা প্রয়োজন। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ তাকে বাস্তবের মুখাপেক্ষী করতেও সাহায্য করতে পারে।
পুরনো প্রেমে ফেরা- বিচ্ছেদের পরও দম্পতির মধ্যে ভালোবাসা বা বন্ধুত্ব কমেনি। এমন ঘটনা আকছাড়ই ঘটতে দেখা যায়। যা খুবই ভাল লক্ষণ। বলা যেতে পারে, নৈমিত্তিক সংসারের জাঁতাকলে পুরনো প্রেমে পেষাই হয়ে বিচ্ছেদ সেখানে নতুন মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। কেরিয়ারে সাফল্য- বিচ্ছেদের পর চল্লিশোর্ধ্ব মানুষ নিজের কাজে ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্বশীল হয়েছেন। এটা অনেক ক্ষেত্রেই প্রমাণিত। এর মূল কারণ, একদিকে পরিবারের দায়িত্ব সামলে কাজ করার ক্লান্তি কেটে গিয়েছে তাঁর। অন্যদিকে নিজের জন্য কাজ করার তাড়নাও বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই পরিস্থিতি তাঁকে কেরিয়ারের উন্নতি ডেকে আনতে পারে।
বাধা গতের ভাবনা থেকে মুক্তি- একজনের প্রতি অনুগত প্রেম এবং সে সংক্রান্ত মিথ থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন বিশেষে জরুরি। বৈবাহিক সম্পর্কে থাকতে থাকতে সম্পর্কের প্রতি প্রত্যাশা বেড়ে যায়। প্রত্যাশা পূরণ না হলেই তৈরি হতে পারে ভাঙনের সূত্রপাত। বিচ্ছেদের ফলে সে সম্পর্কেও স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হতে পারে। তার ফলে পরবর্তী জীবনের প্রত্যাশার চাপ কমিয়ে ফেলা সম্ভব। দীর্ঘ জীবন- সুস্থ জীবনই দীর্ঘ জীবনের মূল চাবিকাঠি। আর শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য। অসুস্থ, অসুখী দাম্পত্য থেকে বেরিয়ে আসা যার এক এবং একমাত্র উপায় হতে পারে।