প্রায় দুই দশক পর আফগানিস্তান তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার পর আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে পড়েছে আফগানিস্তনের সাধারণ নাগরিক। তালিবান শাসনের ভয়ঙ্কর পরিণতি আঁচ করতে পেরে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের শেষ সম্বলটুকু নিয়ে আপ্রাণভাবে চাইছে দেশ ছাড়তে। রবিবার কাবুল দখল হয়ে যাওয়ার পর সোমবার এই রকমই দৃশ্য বারবার দেখা গেছে। তাত্পর্যপূর্ণভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবিতে দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানে দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ৬৪০ জন আফগানি সেই বিমানে উঠেছে।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছেন যে বিমানটির এত লোক বহন করার উদ্দেশ্য ছিল না, তবে আতঙ্কিত আফগানরা দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য ছুটে আসে।
তাঁদের অসহায়তাকে গুরুত্ব দিয়েও বিমানটিকে কাতারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে বিমানকর্মীরা। প্রকৃতপক্ষে, পালানোর জন্য এত উদগ্রীব হয়ে পড়েছিল যে দু’জন আফগান নিজেদের জীবনের কথা চিন্তা না করে বিমানের চাকা ধরে ঝুলে পড়েছিল। বিমান আকাশে ওড়ার সাথে সাথে তাঁদের মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন সামরিক বাহিনী সাময়িকভাবে বিমান চলাচল বন্ধ রাখায় আফগানরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মাকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কেউ জোর করে রানওয়েতে পার্ক করা বিমানে উঠেছিলেন, আবার কেউ কেউ জেট ব্রিজ থেকে অনিশ্চিতভাবে ঝুঁকছিলেন। মার্কিন সৈন্যরা কড়া ভাবে রানওয়ে পাহারা দিচ্ছিল, কিন্তু জনতা তাঁদের অতিক্রম করে বিমানের কাছে পৌঁছতে চাইছিল। সেই সময় মার্কিন বাহিনীর তরফে গুলি চালানো হয়।
মার্কিন এয়ার ফোর্সের একটি বোয়িং সি -১৭ গ্লোবমাস্টার থ্রি ওড়ার সময় তার সামনে একটি হেলিকপ্টার উপচে পড়া লোকজনকে সরায়। একবিংশ শতাব্দীতে এই রকম ভয়ঙ্কর দৃশ্যের সাক্ষী হচ্ছি আমরা প্রত্যেকে। অন্যান্য দেশের অনেক মানুষ এখনও আফগানিস্তানে রয়েছেন, যাঁরা তড়িঘড়ি নিজের দেশে ফিরে আসতে চাইছেন।