পিসি নিউজ বাংলা : ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দের মৃত্যু রহস্য। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে। গলায় ফাঁস লেগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। কিন্তু বেশ কিছু ঘটনা এই মৃত্যুকে খুনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশের তরফে মুখ খোলা হয়নি। আপাতত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ। সেই রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে সূত্রের খবর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পল্লবী-সাগ্নিকের বেশ কিছু ছবি এখন নেটিজেনদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এমনকি গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোশ্যাল মিডিয়া একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে তার প্রেমিক সাগ্নিক হাতের আংটির বাক্স নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ক্যাপশনে লেখা,’অবশেষে’। মনে হচ্ছে আংটি পরিয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিচ্ছেন প্রেমিক। আনন্দিত দেখাচ্ছিলো পল্লবীকে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে দুজনের সম্পর্কে যে ফাটল ধরেছিল পল্লবীর বন্ধু-বান্ধবের নজরে তা এসেছিল বলে জানা যায়। ঝগড়ার পাশাপাশি পল্লবীর গায়েও হাত তুলতেন সাগ্নিক। এছাড়া পল্লবী আর সাগ্নিকের নামে ব্যাঙ্কে একাধিক জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ছিল, এক জায়গায় ১৫ লক্ষ টাকা জমা ছিল। সাগ্নিক সাধারণ পরিবারের ছেলে হলেও, তাঁর জীবন যাত্রা ছিল উচ্চাভিলাষী। সাগ্নিকের দামি গাড়ির ইএমআই নাকি পল্লবীই চোকাতেন। এছাড়া ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কেনার কথাও সামনে আসে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুলিশের দাবি, অর্থ চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছিল অভিনেত্রীকে। সারাক্ষনই দুশ্চিন্তায় ভুগতেন তিনি।
এদিকে সাগ্নিকের বাবা জানিয়েছিলেন, ‘ওরা দুজন লিভে- ইন করছে জানতাম। তাতে আমাদের মত ছিল না। আমরা চেয়েছিলাম ওরা তাড়াতাড়ি বিয়ে করুক’। সম্পর্কের টানাপড়েনে অকালে চলে যেতে হল ‘মন মানে না’র গৌরীকে। ‘আমি সিরাজের বেগম’,’কুন্জছায়া’, ‘রেশম ঝাঁপি’ এবং ইদানিং ‘মন মানে না’র মত সিরিয়ালের জনপ্রিয় মুখ ছিলেন পল্লবী।
প্রসঙ্গত, রবিবার সকালবেলা গড়ফার আবাসন থেকে অভিনেত্রী পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর গলায় বিছানার চাদর জড়ানো ছিল। দরজা ভেঙে ঢুকতে হয়েছিল পল্লবীর লিভ-ইন পার্টনার সাগ্নিক চক্রবর্তীকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
এই দুর্ঘটনার পর পল্লবীর পরিবারের লোকজনের অনুমান, ‘হয়তো খুন করা হয়েছে পল্লবীকে’। পরিবারের লোকজনের আরও অভিযোগ বিবাহিত ছিলেন পল্লবীর লিভ-ইন পার্টনার সাগ্নিক। এমনকী, অন্য মহিলাদের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িত ছিলেন সাগ্নিক। পল্লবীর অনুপস্থিতিতে গড়ফার ফ্ল্যাটে মাঝেমধ্যেই সাগ্নিকের সেই সমস্ত বান্ধবীরা আসতেন বলে অভিযোগ পল্লবীর পরিবারের। হাওড়া রামরাজাতলা মেয়ে পল্লবী। শনিবার নাকি পল্লবী ফোন করে মায়ের কাছে রান্নার আগে বিশেষ পদের রেসিপি জানতে চেয়েছিলেন। তারপরই তারা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, কেউ যদি আত্মহত্যা করার কথা ভাবে, তার আগে কি নতুন কোনও রান্না শিখতে চান?