দীর্ঘদিনের দাবির পর অবশেষে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে চালু হতে চলেছে ‘আই ব্যাঙ্ক’। শুক্রবারই স্বাস্থ্য ভবনে সেই সংক্রান্ত অনুমোদন দিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠিয়েছে।
রাজ্য ও কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যৌথ উদ্যোগে আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যেই ওই ‘আই ব্যাঙ্ক’ চালু করতে নির্দেশ এসেছে।
বর্তমানে এই হাসপাতালে ‘আই ব্যাঙ্ক’ না থাকায়,
সংগৃহীত চোখ কলকাতায় পৌঁছতে ১০ ঘণ্টা সময় লাগছে। এর ফলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। নানা কারণে প্রতি বছর প্রায় আড়াই হাজার শিশুর কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যায়। তাই এখানে ‘আই ব্যাঙ্ক’ হলে মানুষ উপকৃত হবে। এই সিদ্ধান্তে খুশি চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিও। মৃত্যুর পর চক্ষুদানে এ রাজ্য অন্য রাজ্যগুলির থেকে অনেক পিছিয়ে। এই জেলায় চক্ষু সংরক্ষণের উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় এমন অবস্থা।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার চক্ষুদান সংক্রান্ত বিভাগের এক ব্যক্তি বলেন, “মরণোত্তর চক্ষুদানে মুর্শিদাবাদ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বহরমপুর শহর ছাড়া আরও কোথাও বাসিন্দাদের মরণোত্তর চক্ষুদানে আগ্রহ দেখা যায় না। তাছাড়া, চোখ দানের পর তা সংরক্ষণ করতে নিয়ে যেতে হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ফরাক্কা থেকে রেজিনগর, ডোমকল, জেলার এতটাই ব্যাপ্তি যে সময়ের মধ্যে পৌঁছে কর্নিয়া সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে আমাদের পক্ষে। জেলার ক্লাব ও সংস্থাগুলির রক্তদানে আগ্রহ থাকলেও মৃত্যুর পর চোখ দানের বিষয়টি নিয়ে কেউ তেমন ভাবে না। ফলে চোখ দান নিয়ে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। অথচ, চোখ দানের মাধ্যমেই দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব। সকলেরই এটা ভেবে দেখা জরুরি। গ্রামীণ এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে হবে। তবেই মরণোত্তর চোখ দানের হার বাড়া সম্ভব। ’’
জেলার এক চক্ষু চিকিৎসক বলেন , “জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ‘আই ব্যাঙ্ক’ গড়ে তোলা হয় না কেন, সেই প্রশ্ন ওঠাটা সঙ্গত। তবে এটাও ঠিক, কর্নিয়া সংরক্ষণ করলেই হবে না। কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের জন্য দক্ষ শল্যচিকিৎসকের অভাব জেলায় রয়েছে।”
জেলায় আইএমএ-র সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্য্য বলছেন, “বর্তমানে গোটা পূর্ব ভারতে আই ব্যাঙ্ক রয়েছে শুধু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘আই ব্যাঙ্ক’ হলে শুধু সংরক্ষণই নয়, চোখ প্রতিস্থাপন করাও সম্ভব হবে। তাতে উপকৃত হবেন আশপাশের জেলার বহু মানুষ।’’