পিসি নিউজ বাংলা : তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে চাতক পাখির মতো বৃষ্টির অপেক্ষা করছে রাজ্যবাসী। পরিস্থিতি কথা বিচার করে গরমের দাপট থেকে পড়ুয়াদের বাঁচাতে এবার আগাম গরমের ছুটি ঘোষণা নয়। বরং ‘মর্নিং স্কুল’ চালুর নির্দেশ দিল রাজ্য শিক্ষা দফতর। সোমবার বিকাশ ভবন নির্দেশ দিয়েছে যে, পড়ুয়ারা যাতে শরীর সুস্থ রেখে স্কুলে যেতে পারে, তাই রাজ্যের সব স্তরেই ‘মর্নিং স্কুল’ চালু করতে বলা হয়েছে।
করোনার দাপটে গত দু’বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল বন্ধ। এর ফলে পঠনপাঠনে অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই কারণে গরমের হাত থেকে পড়ুয়াদের রেহাই দিতে ছুটি এগিয়ে আনা নয়, বিকল্প ব্যবস্থা করেছে শিক্ষা দফতর। চাঁদিফাটা রোদের হাত থেকে বাঁচতে গরমের ছুটি এগিয়ে আনার দাবি উঠছিল রাজ্যের সর্বত্র। সেই দাবির সুরাহা হয়নি ঠিকই, কিন্ত সুস্থ থেকে পড়ুয়ারা যাতে স্কুলে যেতে পারে, সেই জন্য প্রাথমিক, এসএসকে, এমএসকে থেকে উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক— সব স্তরেই ‘মর্নিং স্কুল’ অর্থাৎ সকালে স্কুল চালু করতে হবে। সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, মর্নিং স্কুল চালু হলেও পড়াশোনায় যাতে কোনও রকম ঘাটতি না-হয়, সেটা দেখতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই। তবে কবে থেকে সকালে স্কুল চালু হবে, সে বিষয়ে নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
নির্দেশিকায় এও জানানো হয়েছে, মর্নিং স্কুল’ মানে সকাল সাড়ে ৬টায় হাজিরা, ৭টার মধ্যে পঠনপাঠন শুরু। বেলা ১১টার মধ্যে স্কুল ছুটি। এই সময়ের মধ্যে স্কুলের পঠন-পাঠন সেরে ফেলতে পারলে গরমের তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচবে পড়ুয়ারা। কোনও স্কুল যদি সকালে পঠনপাঠন চালু করতে না-পারে, সে-ক্ষেত্রে গরম থেকে রক্ষা পেতে পড়ুয়াদের কী কী করতে হবে এবং স্কুলকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, স্বাস্থ্য অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করে তা ঠিক করতে হবে। গরমের মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
এদিকে ছুটি এগিয়ে আনা- না আনা নিয়ে শিক্ষামহলে কার্যত দ্বিমত দেখা দিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ গরমের ছুটি এগিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রচণ্ড গরমে পড়ুয়া থেকে পরীক্ষার্থী, সকলেরই হাঁসফাঁস দশা। অসুস্থও হয়ে পড়ছে অনেকে। শিক্ষার করোনা-ক্ষত নিরাময়ের তাগিদে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অন্য একটি অংশ অবশ্য চাইছেন না, ছুটি এগিয়ে আসুক। তাঁদের বক্তব্য, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। অচিরেই শুরু হতে চলেছে বিভিন্ন শ্রেণির ‘ফার্স্ট সামেটিভ’ বা প্রথম সামগ্রিক মূল্যায়ন। চলবে ৭ মে পর্যন্ত। সুতরাং তার আগে গরমের ছুটি দেওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন অনেকেই।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোমবার বলেন, ‘‘এই নয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে পুরো পরিস্থিতি জানাব।’’
সরকারি স্কুলে এ বার গরমের ছুটি পড়ার কথা ২৪ মে। চলবে ৪ জুন পর্যন্ত। অর্থাৎ গরমের ছুটি ধার্য করা হয়েছে মাত্র ১১ দিন। প্রশ্ন উঠছে, এখনই যা অবস্থা, গরমের ছুটির জন্য কি ২৪ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করা সম্ভব হবে?