মালদহ: শনিবার রাত পোহালেই ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন শুরু হবে। যাঁদের রক্ত, শ্রম, ত্যাগে এই স্বাধীনতা পেল দেশ তাঁরাও ছাড় পেলেন না! অভিযোগ সেই ‘কাটমানি’-র। স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা এলাকার প্রথম বিধায়কের পরিবারের কাছ থেকেই এবার কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল মালদহের হরিশচন্দ্রপুরে।
খোদ স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা হরিশচন্দ্রপুরের প্রথম বিধায়কের দুঃস্থ পরিবার শাসকদলের কাটমানির শিকার! আবাস যোজনার ঘর চাইতে গেলে নাকি এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মুখের ওপর জানিয়ে দেন টাকা না দিলে ঘর পাওয়া যাবে না! অভিযোগ, এলাকারই শাসকদলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলা হরিশচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তেঁতুলবাড়ি এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশচন্দ্রপুরে।
মালদহ জেলার হরিশচন্দ্রপুরের তত্কালীন আদিবাসী সমাজের নেতা ছিলেন বিরসা ওঁরাও। গান্ধীজির ডাকে ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন’-এ অংশ নিয়েছিলেন। সে সময় ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে মালদহ জেলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে তিনিও আন্দোলনের অংশীদার হন। তাঁদের সেই শ্রম, ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে মিলেছে স্বাধীনতা। পরবর্তী কালে বিরসা ওঁরাও মালদা জেলার একটি আসন থেকে প্রথম আদিবাসী বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিতও হন।
স্বাধীনতার ৭৪ বছর কেটে গিয়েছে। শনিবার রাত পার হলে মোড়ে মোড়ে দেখা যাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দৃশ্য। তবে সেই এলাকার প্রথম আদিবাসী বিধায়ক তথা স্বাধীনতা সংগ্রামীর উত্তরসূরীরা রয়েোছেন চরম দূর্দশায়। ভাঙা টালির চালের ঘরে সপরিবারে বাস করছেন বিরসার বর্তমান প্রজন্ম। বহুবার স্থানীয় পঞ্চায়েতে আবেদন করেও নাকি মেলেনি সরকারি আবাস যোজনার ঘর। পরিবারের লোকের আরও অভিযোগ, ঘর চাইতে গেলে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ফুলকুমার পাশমান সাফ জানিয়ে দেন,কাটমানি না দিলে ঘর মিলবে না।
এদিকে এই ভরা বর্ষাতে শিশুদের নিয়ে জলের মধ্যেই দিনযাপন করতে হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারকে। স্বাধীনতার ৭৪ বছর অতিক্রান্ত। আর এর মধ্যে মালদা জেলার এক স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিবারের করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ বর্তমান পরিস্থিতিতে শাসক দলের জনপ্রতিনিধির কাছে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতই নোংরা কাটমানির শিকার হতে হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা হরিশচন্দ্রপুরের প্রথম বিধায়কের পরিবারকেও। এমনকি আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্মৃতি রক্ষা করতেও তত্পর নন এলাকার প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।