Saturday, April 20, 2024
spot_img
spot_img
Homeরাজনীতি'এটা কী সংস্কৃতি!' দিলীপের নিশানায় অনুব্রতর 'গুন্ডাবাহিনী'

‘এটা কী সংস্কৃতি!’ দিলীপের নিশানায় অনুব্রতর ‘গুন্ডাবাহিনী’

বিতর্ক কখনওই যেন পিছু ছাড়তে চাইছে না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University)। সদ্যই বিশ্ববিদ্য়ালয়ের তিন পড়ুয়াকে তিন বছরের জন্য বরখাস্ত ও দুই অধ্যাপককে নিলম্বন করার অভিযোগে সরব হয়েছেন বিশ্বভারতীর অধ্য়াপক ও পড়ুয়ারা। সেই ঘটনায় খোদ অনুব্রত মণ্ডল উপাচার্যকে তিনদিন ঘেরাওয়ের নিদান দেন।

বৃহস্পতিবার, পাল্টা তৃণমূল জেলা সভাপতিকে নিশানা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

তবে, এই প্রথম নয়, বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) উপাচার্যের ‘গতিবিধি’-কে কেন্দ্র করে আগেও মন্তব্যের পাল্টা মন্তব্যে জড়িয়েছেন দিলীপ ও অনুব্রত। উপাচার্য বিদ্যুত্‍ চক্রবর্তীর প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেছিলেন, “বিশ্বভারতীর উপাচার্য একটা পাগল। ওঁর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওঁ এতটাই পাগল যে ঘরে প্লেট থালা ছুড়ে ছুড়ে ভেঙে ফেলে। তখন ওঁর বউ ইনজেকশন দিয়ে শান্ত করে। ওই উপাচার্যের জন্যই বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” কেষ্টর ‘কুমন্তব্য’-র পাল্টা বিজেপি নেতা বলেন, “অনুব্রত নিজেকে বড় শিক্ষিত মনে করেন। এর আগেও ওঁ উপাচার্যকে পাগল-ছাগল বলেছেন।”

রাজ্যে শিক্ষার হালহকিকত প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে দিলীপ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষার জন্য বিখ্যাত। সেখানে এই রাজ্যে শিক্ষা তলানিতে এসে ঠেকেছে। রাজ্যর শিক্ষিকারা বিষ খেয়ে সুইসাইড করার চেষ্টা করছেন। আর তৃণমূল নেতারা বলছেন যেখানে সেখানে ঘেরাও করবেন। বিশ্বভারতীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে গুন্ডা দিয়ে ঘেরাও করবে বলছে। এটা কী সংস্কৃতি! বাংলায় শিক্ষার মান এত নীচে নেমে গিয়েছে!” এখানেই থামেননি বিজেপি নেতা। মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা চেয়ে তিনি বলেন, “মমতাদিদি একটু চেয়ারটা ছেড়ে দেখুন না! পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অনেক ভাল হয়ে যাবে। এরা সব ছাড়বে, শুধু গদি ছাড়বে না।”

সম্প্রতি, বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) সাসপেন্ড হওয়া তিন পড়ুয়া ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ এবং রূপা চক্রবর্তীকে তিনবছরের জন্য বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, পদার্থবিজ্ঞানের দুই অধ্যাপক পীযুষকান্তি ঘোষ ও অরণি চক্রবর্তীকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে নিলম্বিত করেছে বিশ্বভারতী। আচমকা এই সাসপেনশন ও পড়ুয়াদের বরখাস্তের নোটিসে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অন্য় পড়ুয়া ও অধ্য়াপকরা। বিশ্বভারতীর ছাত্র ও অধ্যাপক সংগঠন VBUFA বুধবার এই মর্মে তৃণমূলের জেলা সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেন।

সেই বৈঠকেই কেষ্ট মণ্ডল বলেন, “বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁরা পাগল উপাচার্যকে ঘেরাও করুক। টানা তিনদিন ঘেরাও করে রাখব। তৃণমূল কংগ্রেস অধ্যাপকদের পাশে রয়েছে। বিশ্বভারতীকে পুরো নষ্ট করে দিয়েছে ওই পাগল উপাচার্য। চতুর্দিকে ময়লা, নোংরা। ওঁকে ঘেরাও করা হবে। ওঁর পাগলামি তো! সব পাগলামি ছাড়িয়ে ছাড়ব। আমার জানা রয়েছে এর ওষুধ কী! ওই পাগল উপাচার্যের ব্যবস্থা হবে। যে পারে আটকে দেখাক!”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। অনেকের মতে, যে বিশ্বভারতীর অভ্য়ন্তরে রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘিরে এত বিতর্ক সেখানে খোদ অধ্যাপকেরাই একটি বিশেষ দলের সমর্থন চাইলেন কেন? এ প্রসঙ্গে, বিশ্বভারতীর ছাত্র ও অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ তথা বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটি ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন (VBUFA)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উপাচার্যের স্বৈরতন্ত্র রুখতে কোনও রাজনৈতিক দলের সাহায্য নেওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সংগঠনের এক ছাত্রনেতার কথায়, “আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। যে স্বৈরতন্ত্র উপাচার্য চালু করেছেন তা বন্ধ হওয়া দরকার। সেই জন্য বাধ্য় হয়েই আমরা রাজনৈতিক দলের সাহায্য নিয়েছি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments