PC News বাংলা :- পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহলের কুড়মী সহ সব আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব হল টুসু পরব। ছোট মকর অর্থাৎ অগ্রহায়ণ সংক্রান্তিতে ডিনিমাই স্থাপন করে একমাস ধরে আরাধনা করা হয় টুসু গীত।
আর এই মকর সংক্রান্তির দিন টুসুকে শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় অর্থাৎ বিসর্জন।ডিনিমাই গঠন করা হয় গোবরের ওপর বিভিন্ন বীজ স্থাপন করে সিন্দুর,ফুল ও বিভিন্ন উপাচারে।আদিবাসী কুড়মি সম্প্রদায়ের মতে,এটা হল বীজ সংরক্ষণের একটা ভালো উপায়।
চাঁউড়ীর দিন জুগনীবাইটা অর্থাৎ পরিবার এবং সমাজের অনিষ্টকারী ও অপ্রয়োজনীয় জিনিস গুলো জঙ্গলের নির্জন স্থানে ফেলে আসা হয়।এই দিন চাল রাখা হয় খড়ের তৈরি একটি বিশেষ আধারে,যাকে চালপুড়া বলা হয়।তারপরের দিন বাঁউড়ি এই দিন বাড়তি খাদ্য শষ্য ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখা হয় পুড়ায়।
সবে নতুন ধান কৃষকের ঘরে চালে পরিনত হয়েছে সেই চালের গুঁড়ি দিয়েই বিভিন্ন পিঠে পুলি তৈরী হয়,যার অন্যতম হল মাংসপিঠা।
এই দিন বাড়ির মেয়েরা সারা রাত্রি জেগে থেকে টুসু গীত ও টুসু সেবা(সারা রাতে ১৬ বার) করেন। বাকিদের রাত্রি বেলায় পায়ে তেল দিয়ে ঘুমাতে হয়, এই সময়ে খুব ঠাণ্ডার কারণে পায়ে সরিষার তেল ভালো করে মালিশ করে ঘুমাতে হয়।
পরেরদিন মকর সংক্রান্তি অর্থাৎ কুড়মালী বছরের শেষ দিন।এইদিন মকর ডুব ও টুসু ভাসান।সূর্যোদয়ের সাথে সাথে স্নান সেরে নতুন বস্ত্র পরিধান করেন সবাই।বিভিন্ন জায়গায় চলে বিভিন্ন নাচ গানের আসর।প্রকাশিত হয় কুড়মালি নববর্ষের ক্যালেণ্ডার।এভাবেই কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ পুরোনো বছরকে বিদায় জানান।