করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছিল মেদিনীপুর শহরেই। জেলার সদর শহরে অবশ্য টিকাকরণের খুব একটা ঊর্ধ্বগতি নেই। শহরে এখনও পর্যন্ত প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ৯৭ শতাংশ মানুষ। আর দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ। অনেক বয়স্ক মানুষ এখনও টিকাকরণের বাইরে রয়েছেন।
পরিস্থিতি দেখে শহরে ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুল্যান্সে টিকাকরণের পরিকল্পনা করেছে মেদিনীপুর পুরসভা।
অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই চলবে টিকাকরণ কর্মসূচি। এ ক্ষেত্রে টিকা দেওয়া হবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এবং ৮০ ঊর্ধ্বদের। অ্যাম্বুল্যান্সে থাকবেন চিকিত্সক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। ইতিমধ্যে পুরসভার পরিকল্পনার কথা জেলাশাসক রশ্মি কমলকে জানিয়েছেন পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সৌমেন খান।
কলকাতা পুরসভা ‘ভ্যাকসিনেশন অন হুইল’ চালু করেছে। সেই কর্মসূচির ধাঁচেই মেদিনীপুরে এই কর্মসূচির পরিকল্পনা। সৌমেন জানাচ্ছেন, পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সই এই কর্মসূচিতে ব্যবহৃত হবে। চেয়ারম্যান বলেন, ”বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের এবং ৮০ ঊর্ধ্বদের কথা ভেবেই বিশেষ এই পদক্ষেপের কথা ভাবা হয়েছে। এর পিছনে একটা কারণ হল টিকাকরণ কর্মসূচিকে আরও ত্বরান্বিত করা।” পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুল্যান্সে চার-পাঁচজনের দল পরিষেবা দেবে। পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ফলে, টিকা রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। শীঘ্রই শহরে এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা।
মেদিনীপুর শহরে টিকাকরণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও করছে পুরসভা। এখন শহরে ৪টি কেন্দ্র রয়েছে। তা বেড়ে ৬টি হতে পারে। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের ২টি হাইস্কুল চত্বরে টিকাকরণ কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই দু’টি অতিরিক্ত কেন্দ্রে সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন টিকাকরণ হবে— সোম, বুধ এবং শুক্রবার।
অনেকে মনে করাচ্ছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছিল জেলার সদর শহরেই। ওই পর্বে মাত্র এক মাসে প্রায় ১,৫০০ জন করোনা সংক্রমিতের হদিশ মিলেছিল শহরে। পুরসভার এক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত শহরের প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দা করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। শহরে এখন সক্রিয় রোগীও রয়েছেন।
সার্বিকভাবে জেলায় অনেক বয়স্ক মানুষ এখনও টিকাকরণের বাইরে রয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৬০ ঊর্ধ্ব মানুষ রয়েছেন ৬,৩৪,৪০৮ জন। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত অন্তত একটি ডোজ় নিয়েছেন ৫,৩০,৩৬৭ জন।