প্রকাশ্য রাস্তা থেকে মা ও মেয়েকে অপহরণ করে বন্দি করে, ১১ দিন ধরে চলত অকথ্য অত্যাচার। ঘটনাটি ঘটে মালদহে। মা ও মেয়ে ছিল ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠল জমি মাফিয়ার বিরুদ্ধে। তারপর মুক্তিপণ দিয়ে রেহাই মেলে ওই গৃহবধূ ও তাঁর দুই মেয়ের।
এই ঘটনাটি ঘটেছে, মালদহের মোথাবাড়ি থানা এলাকায়। এ নিয়ে যখন তারা থানায় অভিযোগ জানাতে যায়, তখন পুলিশ অস্বীকার করে তাঁদের অন্য থানায় যেতে বলেন । তারপর এক আইনজীবীর সাহায্যে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্যাতিতা ওই বধূ।
এই ঘটনাটি মালদহ জেলা আদালত গ্রহণ করেছে। ইংরেজবাজার থানাকে ঘটনার এফআইআর দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
অভিযুক্ত ও তার দলবল এই ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এই ঘটনায় পুলিশের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ওই গৃহবধু জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী থানেতে ঠিকাদারির কাজ করতেন। পরিবার নিয়ে তাঁরা সেখানেই থাকেন। কিন্তু পৈতৃক ভিটে রয়েছে মালদহের মোথাবাড়ি এলাকায়। ছেলের জন্য ১ কাঠা জমি কিনেছিলেন। জমিটি রেজিস্ট্রি করার আগেই গত বছরের জুন মাসে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। তাই আর জমিটি স্থানান্তরিত করা হয়নি। আর্থিক সমস্যার জন্য ওই অভিযুক্তের কাছ থেকে চার লক্ষ টাকা ঋণ নেন ওই বধূ।
টাকা শোধ করার জন্য তাদের ওই ১ কাঠা জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওই বধূ। কিন্তু রেজিস্ট্রি না হওয়ার কারণে সেই প্রক্রিয়া মাঝ পথেই আটকে যায়। কারণ জমিটি অন্যের নামে আছে। ওই জমিটি বিক্রি করার জন্য আদালতের অনুমতি নেওয়ার জন্য মুম্বাই থেকে মালদহে আসেন।
গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁকে ও তাঁর দুই মেয়েকে ১১ মে অভিযুক্ত দলবল নিয়ে মালদহ শহরের রথবাড়ি মোড় থেকে অপহরণ করে। তারপর একটি ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। তারপর টানা ১১ দিন ধরে যৌন ও শারীরিক নির্যাতন চালায় অভিযুক্ত। সাড়ে চার লক্ষ টাকা পন দাবি করে অভিযুক্ত। ১১ দিন পর এক আত্মীয়ের সাথে যোগাযোগ করে টাকা দিয়ে অবশেষে মুক্তি পায়। তারপর তারা ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ অস্বীকার করে। এদিকে অভিযুক্ত ও তার দলবল ওই বধূকে লাগাতার হুমকি দিতে থাকে। তাই বাধ্য হয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।