বেশ কয়েকবছর আগে পুজোর (Durga Puja 2021) কলকাতা (Kolkata) ছেয়ে গিয়েছিল ‘এত বড় সত্যি’ হোর্ডিংয়ে (hording)। দেশপ্রিয় পার্কের সেই ‘সত্যি’ অর্থাত্ বিশালাকৃতির দুর্গা ঠাকুর দেখতে চতুর্থী থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন শহর থেকে শহরতলির সাধারণ মানুষ।
ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে হোর্ডিং পড়তে শুরু করেছে। হোর্ডিংয়ে লেখা ‘এ বার ৩০০ কোটিরপুজো!!!’। কিন্তু কে বা কারা এই বিশাল বাজেটের পুজো করছেন, তার কোনও উল্লেখ সেখানে নেই। করোনা অতিমারীর সময়ে যেখানে মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরোচ্ছে। পুজো হলেও, সব ক্লাব বাজেট কমিয়ে দিয়েছে, সেখানে এত কোটি টাকার পুজো কীভাবে করা সম্ভব? তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিস্তর জল্পনা। কিন্তু ৩০০ কোটির পুজো হচ্ছেই বড়িশাতে।
এত বাজেটের (Big Budget) পুজো কীভাবে অতিমারীর এই কঠিন সময়ে সম্ভব? এ কথা জানতে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম বড়িশা সর্বজনীনের অন্যতম কর্মকর্তা বরুন ঘোষের সঙ্গে। তিনি প্রথমেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, “আমাদের থিম ৩০০ কোটির পুজো, কিন্তু ২০২১ সালের পুজোর বাজেট একেবারেই ৩০০ কোটি টাকা নয়। বরং অন্যান্যবারের তুলনায় বাজেট এ বারে কম।” কিন্তু বাজেট কম হোক বা বেশি থিম নিয়ে যে গল্প বড়িশার এ বারের থিম মেকার কৃশানু পাল শোনালেন, তাও বেশ রোমহর্ষক। এ বারে বড়িশা সর্বজনীনের থিম একেবারেই ইতিহাসে ঠাসা এক গল্প। সেই গল্প পুজোর বাস্তবায়িত করতে যিনি গবেষনা করেছেন তিনি সম্রাট চট্টোপাধ্যায়। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে প্রতিমা গড়বেন সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়।
কৃশানু জানিয়েছেন, আজ থেকে ৪১৫ বছর আগে পুজো ছিল শুধুই একটা শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ। জাহাঙ্গীরের আমলে ১৬০৫ সালে ১২ ভুঁইয়ার একজন রাজা কংসনারায়ণ সেই পুজো একপ্রকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে সর্বজনীন পুজোর রূপ দেওয়ার পথে হেঁটেছিলেন। অধুনা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার তাহেরপুরের সেই পুজো ঠিক পরের বছরেও পরিকল্পনা করা হয়, বাজেট ধার্য হয় তখনকার সময়ের ৯ লক্ষ টাকা। কিন্তু রাজার মৃত্যুতে সেই পুজো সে বারে বন্ধ হয়ে যায়। এ বারে বড়িশা সর্বজনীনের মণ্ডপে উঠে আসবে সেই ১৬০৬ সালের পুজোর ইতিহাস। আর তখনকার ৯ লক্ষ টাকার বর্তমান বাজারমূল্য ৩০০ কোটি টাকা। তাই এ বারে বড়িশা সর্বজনীনের পুজো ‘৩০০ কোটির পুজো’।