হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে পাড়ের মাটি। সর্বগ্রাসী রূপ নিয়ে ক্রমেই গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে গঙ্গা। নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে গাছপালা, তলিয়ে যাচ্ছে চাষের জমি। পাড়ের একাংশ ভেঙে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে স্কুল।বর্ষাকালে ফুলেফেঁপে ওঠা গঙ্গার ভয়ঙ্কর রূপে আতঙ্কে ঘুম উড়েছে হুগলির খয়রামারি গ্রামের বাসিন্দাদের। গ্রামের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় একমাত্র জায়গা খয়রামারি জিএসএফ প্রাথমিক স্কুল। কিন্তু ভাঙনের গ্রাসে এখন নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার পথে স্কুলটি।
নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি থেকে শুরু করে গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ও (Primary School)। শেষ সম্বল বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টায় গ্রামের বাসিন্দারা।
এদিকে, নদী-ভাঙন নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১৫ বছর ধরে একটু একটু করে গ্রামের বিভিন্ন এলাকা নদীর গ্রাসে চলে যাচ্ছে। অথচ, ভাঙন সমস্যা সমাধানে দায়িত্ব কার, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান বলেন, কেন্দ্রের উদাসীনতায় গঙ্গা ভাঙন নিয়ে কিছু করা যাচ্ছে না। বলাগড় ব্লকের অনেকটা এলাকা গঙ্গা ভাঙনের শিকার। শুধু হুগলি জেলা না অন্য জেলাও গঙ্গা ভাঙনের শিকার। সেটা নিয়ে ভাবা উচিত ছিল কেন্দ্রের। ভাঙন আটকাতে বোল্ডার তার জাল ফেলা হয়। স্কুল তলিয়ে গেলে হয়ত বিকল্প জায়গায় স্কুল করতে হবে। কিন্তু এটা স্থায়ী সমাধান না। নদীর নাব্যতা না বাড়ালে ভাঙন ঠেকানো যাবে না।
কবে সমস্যার সমাধান হবে, চাতক পাখির মতো এখন সেদিকেই তাকিয়ে ভাঙনের কবলে পড়া গ্রামের মানুষগুলো। খয়রামারি এলাকার বাসিন্দা আরতি মণ্ডল বলেন, আতঙ্কে রয়েছি। আমি এই স্কুলেই ছোটবেলায় পড়েছি। বড় মাঠও ছিল স্কুলের সামনে, সেটা অনেকদিন আগেই নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। এখন স্কুল বিল্ডিংটাও তলিয়ে গেছে আশঙ্কা করছি। আরেক বাসিন্দা বিমল মণ্ডলের কথায়, চাষের জমি তলিয়ে গেছে অনেকেরই। বাড়িঘরও তলিয়ে গেছে গ্রামের অনেকের। আমার বাড়ি এখনও ঠিক থাকলেও আতঙ্কে আছি। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে।