বর্ধমানের খাগড়াগড়ে প্রায় সাত বছর আগে যে বিস্ফোরণ হয়, সেই বিস্ফোরণের পরে শিমুলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি বাড়িতে বোমা তৈরির কারখানা তৈরির অভিযোগ উঠেছিল জামাত-উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি-র বিরুদ্ধে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের দাবি বাংলায় সেই বোমা তৈরির কারখানা আবার গড়ে তুলছে জেএমবি জঙ্গি। দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুরে ধৃত জঙ্গিদের সঙ্গে আল কায়দা ও হুজি জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগাযোগ রয়েছে। এনআইএও ওই জঙ্গিদের সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে।
২০১৪ সালের অক্টোবরে খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ ঘটে । রবিবার কলকাতায় যে তিন জঙ্গি এসটিএফ এর হাতে গ্রেফতার হয়, তারা হল, নাজিউর রহমান ওরফে জোসেফ, মিকাইল খান ওরফে শেখ সাবির ও রবিউল ইসলাম এরা সেই খাগড়াগাড় কান্ডের মত কলকাতার আশেপাশে বোমা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছিল। সোমবার মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত তাদের ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘ধৃতদের কাছে পাওয়া জেহাদি কার্যকলাপের তথ্য, লিফলেট ও পুস্তিকা দেখে মনে হয়েছে, বাংলার ঘরে ঘরে বোমা কারখানা তৈরি করার প্রচার করছিল তারা।’’ কয়েক বছর আগে জেএমবি-র একটি দল এ রাজ্যে এসে গা-ঢাকা দেয়।
ধৃতেরা বেশ কয়েক বছর কলকাতার উপকণ্ঠে বসবাস করছে। দাবি করছেন গোয়েন্দা কর্তারা। কখনও বেচত মশারি, কখনও ছাতা সারাত তারা। ১৮০০ টাকা ঘর ভাড়া দিত। বাড়ির মালিকদের কাছে তারা নিজেদের ভারতীয় বলে দাবি করত। তারা কারো সাথে কথা বলত না। এক ব্যক্তি তাদের আধার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেয়।
গোয়েন্দারা জানান, জঙ্গিদের একটি ‘ডাকাত’ শাখা আছে। ওই জঙ্গিরা শহরের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও বড় বড় স্বর্ণ বিপণির তথ্য সেই শাখায় পৌঁছে দিত।ফেসবুকে তারা জঙ্গি সংগঠনের প্রচার চালাত। একটি বড় জায়গা ভাড়া নেয় নাজিউরেরা। সেখানে তারা বোমা কারখানা গড়ার ষড়যন্ত্র চলছিল। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘নাশকতার ছক বা মডিউল তৈরির পরিকল্পনা ছিল কি না, তাদের সঙ্গে আর কারা যুক্ত— সবই দেখা হচ্ছে।’’