কথায় বলে, কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। ঝাড়খন্ড এবং বিহারে অতিবৃষ্টির ফলে মুর্শিদাবাদে ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ১০৯ টি গেট খুলে দিতে বাধ্য হয়েছে। তারফলে জল বেড়েছে গঙ্গা এবং পদ্মা নদীতে। প্লাবিত হয়ে পড়েছে মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা থেকে শুরু করে জলঙ্গি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অংশ।
বিএসএফ সূত্রের খবর, নদীতে জলস্তর বৃদ্ধির কারণে গত কয়েকদিনে মালদা জেলার শোভাপুর দিয়ে গরু পাচার যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, লক্ষ্মী নগর, কলাবাগান,প্রতাপগঞ্জ ঘাট, দুসরি পাড়া, মহলদার পাড়া, খান্দুয়া, সেকেন্দ্রা, গিরিয়া, ভৈরবটোলা, চর পিরোজপুর প্রভৃতি এলাকা দিয়ে সন্ধে হলেই শুরু হচ্ছে গরু পাচার।
তবে গঙ্গা ও পদ্মা নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মালদা ও মুর্শিদাবাদের চোরাচালানকারীদের বেশ কিছুটা সুবিধা হয়েছে। বিএসএফ সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদে বন্যা পরিস্থিতির জেরে এই জেলা থেকে বাংলাদেশে গরু পাচার গত কয়েকদিনে বেশ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও উত্তাল গঙ্গা এবং পদ্মা বক্ষে উন্নত প্রযুক্তির নৌকা এবং নাইট ভিশন ক্যামেরা নিয়ে বিএসএফ জওয়ানরা নিরন্তর টহল দিয়ে চলেছে সীমান্তে চোরাচালান আটকানোর জন্য।
বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় দুবছর ধরে মুর্শিদাবাদ জেলাতে সংগঠিতভাবে গরু পাচার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তার ফলে যখনই গঙ্গা ও পদ্মা নদীতে জল বাড়ে, তখনই চোরাচালানকারীরা জল পথে গরু, মোষ পাচারের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। গরু পাচারে বিপুল মুনাফার কারণে রাখালরা (যে সমস্ত ব্যক্তিরা গরু-মোষ ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে যান) নিজেদের জীবন বিপন্ন করে উত্তাল গঙ্গা ও পদ্মা বক্ষে এক জোড়া করে গরু বা মোষ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারপর জলের স্রোতে ভেসে পৌঁছে যান বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ঠিকানাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নদীতে জলস্তর বেশি থাকার কারণে গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত রাখালদের প্রাণের ঝুঁকি বেশি। ফলে একজোড়া গরু পাচারে এখন তারা প্রায় ৩০-৫০ হাজার টাকা মত পাচ্ছে। সূত্রের দাবি, একজোড়া পূর্ণ বয়স্ক ভারতীয় গরু বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে।